কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে ডাকাতির অভিযোগে যুবদল কর্মী মামুন হোসেনকে আটক করেছে পুলিশ। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনায় মামুনের প্রতিবাদ মিছিল ও গ্রেপ্তারের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে স্থানীয় বিএনপি ও যুবদল নেতারা চাপে পড়েন।
গত ২৪ জুলাই পৌরসভা এলাকায় জামায়াতপন্থী নেতা সাইফুল ইসলাম শোভনের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের অভিযোগ তুলে একটি প্রতিবাদ মিছিল করে বিএনপি। সেই মিছিলের অগ্রভাগে ব্যানার হাতে দেখা যায় যুবদল কর্মী মামুন হোসেনকে। অথচ ঐদিন রাতেই উপজেলার শিলাইদহ ইউনিয়নের খোরশেদপুর এলাকার একটি ইটভাটায় আগ্নেয়াস্ত্রের মুখে নৈশপ্রহরীকে জিম্মি করে ডাকাতি করে মামুন ও তার দল। তারা ভাটার দুটি ট্রাক্টরের ইঞ্জিন ও ব্যাটারি খুলে নিয়ে যায়, যার বাজার মূল্য প্রায় ১৬ লাখ টাকা।
পরে ২৭ জুলাই পুলিশ মামুন ও তার সহযোগী রমজানকে আটক করে আদালতে পাঠায়। মামুন কুমারখালীর বুজরুক বাঁখই গ্রামের মোহাম্মদ ওয়াহিদুজ্জামানের ছেলে। দীর্ঘদিন সিঙ্গাপুরে অবস্থান করে সম্প্রতি দেশে ফিরে যুবদলের রাজনীতিতে সক্রিয় হন।
থানায় হাতকড়া অবস্থায় মামুনের ছবি ও একইদিন মিছিলে নেতৃত্ব দেওয়ার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সমালোচনার ঝড় ওঠে। ফেসবুকজুড়ে নিন্দার পাশাপাশি স্থানীয় বিএনপির ওপর চাপ বাড়ে।
এ নিয়ে কুমারখালী উপজেলা বিএনপির শীর্ষ নেতাদের একাধিকবার ফোন করা হলেও কেউ মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে উপজেলা যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রুবেল হাসান রজন জানান, “মামুন যুবদলের কোনো পদে নেই। সে কেবল জিয়া মঞ্চ নেতা রাকিবের আত্মীয় হওয়ায় মিছিলে ছিল।”
স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, মামুন দীর্ঘদিন ধরে কিশোর গ্যাং পরিচালনা, জমি দখল, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত। এক বছর আগে তার বিরুদ্ধে এক এনজিও নারী কর্মীকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছিল। পরে সে বিদেশে চলে যায়। সম্প্রতি ফেরার পর একটি নারী নির্যাতনের মামলাতেও জড়িত ছিল বলে জানা গেছে।
এদিকে কুমারখালীতে জামায়াতপন্থী নেতা শোভন ও ইজারাদার রাকিব হোসেনের অনুসারীদের মধ্যে গত ১৬ জুলাই সংঘর্ষের ঘটনায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। পাল্টাপাল্টি মামলার পরও পুলিশ এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করেনি।