Saturday, August 2, 2025

শেখ হাসিনাকে নিয়ে বিপদে ভারত! ধরা খেয়ে যাচ্ছে একের পর এক ষড়যন্ত্র

আরও পড়ুন

২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে দেশজুড়ে ইতিহাসের জঘন্যতম নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে ফ্যাসিস্ট হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেলে নিজেদের ছায়াতলে পরম আপনজনের মত ঠাঁই দেয় কট্টর ইসলাম বিদ্বেষী ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তবে এবার যেনো পতিত স্বৈরাচার হাসিনা আর তার নিষিদ্ধ দল আওয়ামী লীগ ইস্যুতে রীতিমতো বেঁকে বসেছে নরেন্দ্র মোদির সরকার। এক রকমের কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে দেশটিতে আওয়ামী লীগের কোন মিটিং বা দলীয় নেতা-কর্মীদের সাথে হাসিনার বৈঠকে। এখন তাই চারিদিকে প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলো দাদাবাবুরা? ওরা কি তবে ফিরিয়ে দেবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হওয়া খুনি হাসিনাকে।

একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্রের তথ্যমতে, সাবেক ফ্যাসিস্ট পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও নিষিদ্ধ আওয়মী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান মাহমুদ লন্ডন থেকে ভারতে এসেছিলেন দলীয় প্রধান ফ্যাসিস্ট হাসিনার সাথে সাক্ষাতের আশায়। দীর্ঘ ২২ দিন ভারতে অবস্থান করেও তিনি কোনভাবেই কাক্সিক্ষত সেই সাক্ষাৎ পাননি পতিত স্বৈরাচারের। এর পিছনে প্রধান কারণ ভারতীয় সরকারের সরাসরি হস্তক্ষেপ। সুত্রগুলো বলছে, ভারত সরকার এখন হাসিনার সাথে দলীয় কোন নেতা-কর্মীকেই সাক্ষাৎ করতে দিতে রাজি নয়। বিষয়টিকে তারা দেশটির জন্য এক রকমের হুমকি হিসেবে দেখছেন।

আরও পড়ুনঃ  আরেক টিকটকারের ‘রহস্যজনক’ মৃত্যু

শুধু হাসান মাহমুদই নয়। গুঞ্জন রয়েছে স্বৈরাচার হাসিনার ভাতিজা ও যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক এমপি ফ্যাসিস্ট মুজিবুর রহমান নিক্সন চৌধুরীও হাসিনার সান্নিধ্য পাবার আশায় দিল্লিতে অবস্থান করেছেন এক মাসের ওপর। এরপরও ভারত সরকার নিজেদের নিরাপত্তা, এবং বাংলাদেশের সাথে পারস্পারিক সম্পর্কের কথা বিবেচনা করে হাসিনার অত্যন্ত এই ঘনিষ্টজনকেও দেখা করতে দেয়নি। তবে বর্তমানে এই ফ্যাসিস্ট কোথায় অবস্থান করছেন তা জানা যায়নি।

দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই নেতাদের দেখা করতে না দেওয়াই শুধু নয়, বরং দিল্লিতে অনুষ্ঠিত হবার কথা ছিলো আওয়ামী লীগের সম্মেলন যেটিও শেষ পর্যন্ত পণ্ড হয়ে যায় ভারত সরকারের বাঁধায়। প্রতিবেশি দেশটির বর্তমান এই আচরণে মনে হতেই পারে ভারতের দাদাবাবুরা বদলে গেছে, বাংলাদেশের প্রতি সদয় হয়েছে আচরণে আর কর্মকাণ্ডে। তাই হয়তো ওরা ফ্যাসিস্ট খুনি হাসিনাকে বাংলাদেশের সাথে বন্দি বিনিময় চুক্তি থাকায় ফিরিয়ে দেবে।

কিন্তু, রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন ভিন্ন কথা। ভারত তাদের নিজেদের উদ্দেশ্য হাসিলের জন্যই এমন নাটক করছে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ আর খুনিস হাসিনার পথ থেকে ফিরে আসার। কূটনৈতিকরা মনে করছেন, এটি ভারতের নয়া কোন ষড়যন্ত্রের অংশ। কারণ, ভারত কোনভাবেই হাসিনা আর আওয়ামী লীগের বিকল্প তৈরি করতে চায় না বাংলাদেশে। ওরা ভালো করেই জানে হাসিনা যেভাবে পুতুলের মত ছিলো দিল্লি থেকে নরেন্দ্র মোদির মাষ্টার প্লান আর ভারতীয় বিশেষ গোয়েন্দা বাহিনীর সরসরি হস্তক্ষেপে চলতো বাংলাদেশ, সেভাবে এদেশের কোন আগামীর সরকার বা সরকার ব্যবস্থা পা চাটবে না কট্টর ইসলাম বিদ্বেষী মোদির বা দেশও চলতে দেবে না অন্য কোন দেশের প্লানে আর ইন্ধনে।

আরও পড়ুনঃ  শেখহাসিনার বিরুদ্ধে যে গুরুতর অভিযোগ ভারতীয় গণমাধ্যমের

এদিকে আওয়ামী লীগের নেতাদের সাথে হাসিনাকে দেখা করতে না দেওয়া, নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের সম্মেলন দিল্লিতে করতে বাঁধার দেওয়াল তৈরি করা সকল কিছুই এক রকমের বানোয়াট আর কল্প কাহিনী বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। এর কারণ, সামনে ঘনিয়ে আসছে জাতীয় নির্বাচন যেখানে অংশ নিতে পারবে না ফ্যাসিস্ট নিষিদ্ধ দল আওয়ামী লীগ, সুতরাং ভারত বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে বোঝাতে চাইছে আওয়ামী লীগের কোন কিছুতে তারা প্রশ্রয় দিচ্ছে না। এসব বুঝিয়ে বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের সাথে একটি সখ্যতা গড়ার মাধ্যমে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে তাদের সমর্থন আছে বলে বাঙালী জাতিকে ভুল বোঝানো। আর এর মাধ্যমে গোপনে ষড়যন্ত্র করে আওয়ামী লীগকে আরও শক্তিশালী হতে দেওয়া গুছিয়ে নিতে সাহায্য করা পরিশেষে বাংলাদেশের সাথে ঘনিষ্ঠতা বাড়ানোর মাধ্যমে তাদেরকে বাংলাদেশে প্রবেশ করিয়ে আগামী জাতীয় নির্বাচন ভণ্ডুল করা।

আরও পড়ুনঃ  এক-তৃতীয়াংশ আসন প্রেসিডেন্টের হাতে রেখে নির্বাচন দিচ্ছে সিরিয়ার অন্তর্বর্তী সরকার

কুটনৈতিকদের মতে, আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরেই ভারতের বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠ হবার এত পায়তারা, এজন্যই ওরা এমন মিথ্যা নাটক সাজাচ্ছে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ আর পতিত স্বৈরাচার হাসিনাকে বয়কটের। তাই সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে জনগণকে আর বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে হতে হবে পতিত স্বৈরাচার হাসিনা আর তার নিষিদ্ধ দল আওয়ামী লীগের ব্যাপারে আরও দূরদর্শী।

বাংলাদেশে ফ্যাসিস্ট খুনি হাসিনার বিরুদ্ধে প্রায় আড়াই‘শোটি হত্যা মামলা রয়েছে। গণহত্যাকারী এই মানুষরূপী পাষন্ড আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক গ্রেফতারি পরোয়ানা জারিকৃত আসামী। তাই বিশ্লেষকদের মতে, ভারত যতক্ষণ না হাসিনাকে ফিরিয়ে দিচ্ছে ততক্ষণ ওদের কোন নাটকই বিশ্বাসযোগ্য নয়। আর ভারত হাসিনাকে ফিরিয়ে দেবে তার গণহত্যার বিচার করার জন্য এটি ভাবাও এক রকমের বোকামি বলেই মনে করেন তারা।

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ